যদি কেউ অভাব-অনটন বা অন্যকোন সমস্যার কারণে ঋণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তার উচিৎ বেশি বেশি ইবাদত করা এবং আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করা।
ঋণ পরিশোধের ব্যাপারে হাদিসে চমৎকার একটি আমলের বর্ণনা রয়েছে। কারো যদি পাহাড় পরিমাণ ঋণও থাকে, এই আমলের উছিলায় আল্লাহ তার ঋণ গুলো পরিশোধের ব্যবস্থা করে দিবেন ইনশাআল্লাহ।
পাহাড় পরিমাণ ঋণ পরিশোধের আমল
কারো যদি প্রচুর ঋণ থাকে এবং দ্রুত পরিশোধ করার ইচ্ছা পোষণ করে, তাহলে তার উচিৎ নিয়মিত নিচের দোয়াটি বেশি বেশি পাঠ করা এবং আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করা।
আরবী উচ্চারণঃ اللَّهُمَّ اكْفِنِي بِحَلاَلِكَ عَنْ حَرَامِكَ، وَأَغْنِنِي بِفَضْلِكَ عَمَّنْ سِوَاكَ
বাংলা উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মাকফিনি বিহালালিকা আ’ন হারামিকা, ওয়া আগনিনি বিফাদলিকা আ’ম্মান সিওয়াক্ব।
বাংলা অর্থঃ হে আল্লাহ, আপনি আমাকে হালাল দ্বারা পরিতুষ্ট করে হারাম থেকে দূরে রাখুন এবং আপনার অনুগ্রহ দিয়ে আপনি ব্যতিত অন্য সকলের থেকে আমাকে অমুখাপেক্ষী করে দিন। (তিরমিজি)
আরো পড়ুনঃ ঘুমানোর আগের দোয়া
যে ব্যক্তি দ্রুত ঋণ পরিশোধ করে, সে অন্যতম উত্তম ব্যক্তি। আমাদের অনেকেই অভাব অনটনের কারণে ঋণ পরিশোধ করতে পারি না।
আবার অনেকে সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও ইচ্ছে করেও কর্য পরিশোধে গরিমসি করি। এটি অত্যন্ত নিকৃষ্ট একটি কাজ। ঋণ পরিশোধের সামর্থ্য থাকলে, যত দ্রুত সম্ভব তা পরিশোধ করে ফেলতে হবে।
হাদিসে বর্ণিত উক্ত দোয়াটি প্রতিদিন বেশি বেশি পাঠ করতে হবে এবং ঋণ পরিশোধের ব্যবস্থা চালিয়ে যেতে হবে।
আরো পড়ুনঃ ঘুম থেকে উঠার পরের দোয়া
পাশাপাশি প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পাশাপাশি অন্যান্য ইবাদত বন্দেগী চালিয়ে যেতে হবে।
ঋণ পরিশোধ করার কিছু কার্যকরী উপায়
আপনার যদি আয় কম হয় এবং অনেক টাকা ঋণ থাকে, তাহলে আপনাকে প্রতিটি পদক্ষেপ ভেবে চিন্তে নিতে হবে। আপনার কত টাকা ঋণ আছে, তার উপর ঋণ পরিশোধের ব্যবস্থা নিতে হবে।
আপনার আয় যদি কম হয় এবং ঋণ বেশি হয়, তাহলে এই ঋণ পরিশোধের জন্য নিচের ধাপ গুলো ফলো করতে পারেন। ইনশাল্লাহ ভালো ফল পাবেন।
১. বাড়তি খরচ একেবারে বন্ধ করে ফেলতে হবে। Wants বাদ দিতে হবে এবং Needs ফোকাস করতে হবে। অর্থ্যাৎ একান্ত দরকারী জিনিস ছাড়া বাড়তি খরচ করা যাবে না।
২. বর্তমানে যেসব আবশ্যিক খরচ আছে, সেগুলোর খরচ কমানোর চেষ্টা করবেন।
৩. আপনার যদি কোন ব্যাংক কিংবা সংস্থার লোন থাকে, তাহলে সেগুলোর লোন নিয়মিত দেয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন। কেননা দেরিতে দিলে অতিরিক্ত সুদ দেয়া লাগবে।
৪. তারপর বন্ধুবান্ধব বা আত্মীয়-স্বজনদের থেকে ঋণ করা টাকার একটা লিস্ট করবেন। ছোট অ্যামাউন্ট থেকে শুরু করবেন এবং ক্রমান্নয়ে বড় অ্যামাউন্ট গুলো শেষে লিখবেন।
৫. ধরুন, একজন পাওনা ২,০০০ টাকা। প্রথমে তার নামটা লিখবেন। এরপর লিখবেন যিনি ২,৯০০ টাকা পাওনা। এভাবে সবার শেষে লিখবেন যিনি ৫০,০০০ টাকা পাওনা। অর্থ্যাৎ এভাবেই লিস্টটা করবেন।
৬. এভাবে ক্রমান্নয়ে ছোট ঋণ গুলো দিবেন এবং আস্তে আস্তে বড় গুলোতে যাবেন। এভাবে দিলে দেখবেন পাওনাদার কবে যাচ্ছে।
৭. নিজ বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে আয় বাড়ানো এবং ব্যয় কমানোর কৌশল বের করতে হবে।
৮. সর্বপরি সর্বদা ইবাদতে মাধ্যমে আল্লাহকে স্বরণ করবেন এবং ঋণগুলো পরিশোধের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করবেন। পাশাপাশি ঋণ পরিশোধের আমল গুলো করবেন।